স্বাতী-
আপনি আপনার বারান্দাটা ঘুরিয়ে উল্টো দিকে নিয়ে গেলেও আমি কিন্ত পাল্টাইনি। আপনার বাড়ির পিছনে যে আবর্জনা জমেছে, আমি সেখানেও রোজ দেখি বনফুল। বরং ভালোই লাগে। আগাছার ফাঁকে ফাঁকে ফুটে আছে হরেক রকম বাহারি ফুল, ঠিক যেন শৈশব থেকে যৌবনের যুগল হবার আগ মুহূর্তের ছোট ছোট টুকরো টুকরো স্মৃতির মতো।
আমি আপনার বাড়ির পিছন দিকে মুখ করে আগের মতই আমার শ্যাওলা জমা বেলকোনিতে দেখতে পাই আমার পুরানো অতীত। আপনার বেলকোনিটা যখন এদিকে ছিল, রোজ আপনি দোলচেয়ারে বসে কবিতার বই পড়তেন আর ফাঁকে ফাঁকে আমার বেলকোনির দিকে তাকাতেন । ঢং করে আমাকে দেখে জোরে জোরে সুনীল'দার কবিতা আবৃত্তি করতেন, যাতে আমি শুনতে পাই। কখনও কখনও ইশারা করতেন।
আপনার চারতলা বিল্ডিয়ের নীচে আমাদের আধমরা বাড়িটিও ঐসময় আপনার প্রেমে স্বর্গ হয়ে উঠতো। আজ বেলকোনির দিক পরিবর্তন হয়েছে, বদলে গেছেন আপনিও, আপনি এখন উল্টো দিকে অন্যের কাঁধে ভর দিয়ে রৌদ্রের কবিতা পড়েন। দেখতে পাই না, শুনতে পাই না, কিন্ত এখনও অনুভব করি আপনার সেই পাল্টে যাওয়া কন্ঠস্বর।
আমার বেলকোনিটা এখনও আছে। আমি আজও সেখানে ভাঙা কেদারায় বসে তাকিয়ে দেখি আপনাদের সু-উচ্চ ইমারতের দিক পরিবর্তন।
( স্বাতী - একটি বিশেষ নাম )