গল্প | টান | আব্দুল্লাহ আল মামুন রিটন


ইদানীং আমার সকালে দেরীতে ঘুম ভাঙে। আজ সকাল সকাল ভাঙলো অপরিচিত নাম্বারের একটা কল আসার কারণে...
- হ্যালো!
- কেমন আছো বাবা ?
- ভালো আছি। কিছু বলবেন!
- হ্যাঁ, আমার ছোট মেয়ে অসুস্থ্য। ও তোমার সাথে কথা বলতে চায়।
- ও আচ্ছা তাহলে দিন উনাকে।
- হ্যালো ভাইয়া ।
- হ্যাঁ বলুন ।
- আমাকে আপনি করে বলছেন কেনো? আমাকে কি চিনতে পারেননি? আমি রাতু! ছ'বছর আগে আমাকে এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছিলেন। ঐযে রোড একসিডেন্ট থেকে তুলে এনে হাসপাতালে ভর্তি করে রক্ত দিয়েছিলেন! প্রচুর রক্ত ঝড়েছিল আমার! আপনার শরীরে নাকি আমার অনেক রক্ত মেখে গিয়েছিল!
- হ্যাঁ রাতু। চিনতে পেরেছি। কিন্ত আমার এটা নতুন নাম্বার , তুমি পেলে কোথায়?
- ফেসবুকের এড ফ্রেন্ডে আপনার এড এসেছিল, আপনার প্রফাইল পিকচার দেখেই আমি চিনতে পেরেছি। ঐ মুখ আমি ভুলতে পারবো না মরার আগ পর্যন্ত। হয়তো আপনি আমাকে ভুলে গেছেন। কিন্তু আমি এবং আমার পরিবার আপনার কথা ভুলবে না কখনো।
- রাতু, বাদ দাও এসব। এটা তেমন কোন বড় ব্যাপার ছিল না।
- ভাইয়া।
- হ্যাঁ বলো রাতু।
- দোয়া করবেন আমার এবং আমার আগত সন্তানের জন্য। আজ আমি হাসপাতালে ভর্তি হবো। আর আমার প্রথম সন্তান নাকি ছেলে হবে। যদি ছেলেই হয়, ওর নাম আর আপনার নাম এক হবে।

- তুমি আমার ঋণ শোধ করতে চাও? হা হা হা
- না ভাইয়া, এতোদিন আপনি আমাদের বুকে ছিলেন এখন মুখেও রাখতে চাই আপনাকে।
- পাগলামি করো না আপু, ইনশাআল্লাহ্ তোমার এবং তোমার আগত সন্তান দু'জনকেই যেন আল্লাহ্ হেফাজত করেন (আমিন)।
- দোয়া করবেন ভাইয়া।

কাঁদতে কাঁদতে রাতু ফোন কেটে দিল।
ফোন রেখে আমি নিজের রুগ্ন হাতটা নেড়েচেড়ে দেখতে লাগলাম। এখনো কি রক্ত দান করার মতো শরীর আছে আমার.....?
RITON

সম্পাদক (শব্দনগর), লেখক, আবৃত্তিকার, বিশ্লেষক

Post a Comment

COMMENTS

Previous Post Next Post

POST ADS 2