ঈগল তার জীবনের মধ্যবর্তী অবস্থায় এসে তার সমস্ত কৌশল, কৌশল প্রয়োগের জন্য অস্ত্র (পায়ের ধারালো নখ) অকেজো করে ফেলে। অর্থাৎ একটা সময় এসে ঈগলের ডানা ভারি হয়ে যায়, পায়ের নখ বেঁকে যেতে যেতে আক্রমণের উপযুক্ত এঙ্গেল হারিয়ে ফেলে। ঠোঁট ভোঁতা হয়ে যায়। জীবজগতের এই তীব্র আক্রমণের পাখিটি এক সময় তার এগুলো হারিয়ে এমন একটা অবস্থায় পৌঁছায় যে তখন আর শিকার করার উপযুক্ত কোন কিছুই তার থাকেনা। বয়সের ভারে সব বিকৃত হয়ে যায়। ঠিক এই সময়টাতে একটা ঈগলের জন্য তিনটি রাস্তা খোলা থাকে। একটি হলো না খেয়ে অনাহারে মৃত্যু, আত্মহত্যা অথবা নতুন করে আবার শুরুর কৌশল অবলম্বন করা।
এই তিনটাই যে কোন জীবের জন্য অত্যন্ত কষ্টের হয়ে থাকে, খুবই যন্ত্রণার হয়ে থাকে। নিজের ক্ষেত্রে আমরা যদি ঈগলের এই সময় এবং পরিস্থিতিকে একটু অনুভব করার চেষ্টা করি তাহলেও আমরা বুঝতে পারবো এটা কতটাই কষ্টের এবং কতটা অসহায় অবস্থা। কিন্তু ঈগল শেষ পর্যন্ত কোন পথটা বেছে নেয়?
ঈগল এই ক্ষেত্রে তিন নাম্বার অপশনকে বেছে নেয়, যেটা একটি প্রতিক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই অর্জন করতে হয় তাকে। একটি অত্যন্ত শারীরিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে ধৈর্য পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে তাকে যেতে হয়।
এই সময় সে তৈরি হয় শিকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শরীরের তিনটি পার্টকে আবার নতুন করে ফিরে পাওয়ার কাজের জন্য। সে তার ঠোঁট দিয়ে ডানার পাখনা গুলো উপড়ে ফেলতে শুরু করে, যেটা খুবই যন্ত্রণার। অতিরিক্ত বেঁকে যাওয়া ঠোঁট পাথরে ঘষে ঘষে একেবারেই নিশ্চিহ্ন করে ফেলে, এটাও আরও ভীষণ যন্ত্রণার। সব শেষে তার পায়ের নখগুলোকেউ পাথরে ঘষে ঘষে একদম গোরা পর্যন্ত নিশ্চিহ্ন করে ফেলে, এটাও কতটা যন্ত্রণার হতে পারে ভেবে দেখুন।
এর পর সে তার ধৈর্যের পরিচয়ে নেমে পড়ে। অপেক্ষা করে নতুন পাখনা গজিয়ে পূর্বের মত অবস্থায় ফিরে আনা পর্যন্ত। একইভাবে, পায়ের নখ এবং নতুন করে গজানোর পর ঠোঁটের পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকে। এবং একদিন সে তার ধৈর্য এবং কষ্ট দিয়ে প্রকৃতির কাছ থেকে নতুন উদ্যোমকে কিনে নিয়ে আবার শিকারের খোঁজে নব যৌবনের ঈগলের মত আকাশে ডানা মেলে।
Tags:
ছোটগল্প
ভীষণ ভালো লাগলো এবং সমৃদ্ধ হলাম।
ReplyDelete