পৃথিবী থেকে চাঁদ আর দেখা যাবে না

 


রাতের আকাশে চাঁদকে আর দেখা যাবেনা। সত্যিই তাই, চাঁদ ক্রমশ পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে। আর এভাবে চাঁদ পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে সরে যেতে যেতে একদিন আর দেখা যাবে না আমাদের পৃথিবীর রাতের আকাশে, চাঁদের কারণে পৃথিবীর যে সুবিধাগুলো হচ্ছিল সেটাও ধীরে ধীরে কম হয়ে একদিন পৃথিবীর আচরণ বর্তমান থেকে একদম পাল্টে যাবে। ঘটবে বিভিন্ন রকম অঘটন। 


এটা সত্যিই যে চাঁদের কারণে পৃথিবী অনেক সুবিধা ভোগ করে আর তার কারণে পৃথিবীর বুকে সমস্ত জীবন উপকৃত হয়। আকাশে যদি চাঁদ না থাকে তাহলে জোয়ার ভাটার পরিবর্তন সহ পৃথিবী তার নিজ অক্ষের উপর প্রচণ্ড ভাবে কাঁপতে থাকবে যা থেকে সৃষ্টি হবে প্রচণ্ড রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়কর ঘটনার। পৃথিবী তার স্বাভাবিক গতি হারাবে ফলে দিন ক্রমাগত বড় হতে থাকবে। প্রকৃতির ভারসাম্য ব্যাপক ভাবে নষ্ট হবে। জেগে উঠবে বিভিন্ন আগ্নেয়গিরি সে সঙ্গে সাগরের পানির তাণ্ডব শুরু হবে।


জানা গেছে, প্রতি শতাব্দীতে গড়ে ২ মিলি সেকেন্ড করে দিন বাড়ছে। এভাবেই একদিন পৃথিবী তার নিজস্ব কক্ষপথ থেকে ছিটকে পরতে পারে।


তাপমাত্রার এক অস্বাভাবিক পরিবর্তন হবে যার ফলে শীতকালে অতি শীত এবং গরমকালে অতি গরম অনুভব হবৈ।


১৯৬৯ সালে, নাসার অ্যাপোলো মিশন চাঁদে প্রতিফলিত প্যানেল ইনস্টল করেছিল। যেগুলি দেখিয়েছে যে চাঁদ সত্যিই বর্তমানে প্রতি বছর পৃথিবী থেকে ৩,৮ সেমি আশঙ্কাজনক ভাবে দূরে সরে যাচ্ছে।


বর্তমানে চাঁদ আগের অবস্থান থেকে ১৮ গুণ দূরে অবস্থান করছে। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ লক্ষ কোটি বছর ধরে নির্দিষ্ট দূরত্বে পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে এবং ক্রমে দূরে সরে যাচ্ছে। সথে সাথে কমে যাচ্ছে এর ঘূর্ণন গতি, এর থেকে পুরো বিশ্বে ঘটতে পারে আরও বড় বড় ভূমিকম্প । পরিবেশের জন্য হতে পারে মহাবিপর্যয়। এমনকি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে পৃথিবী। পৃথিবী নিয়ে এমনই ভয়াবহ তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা।


প্রতিবছরই গ্রহের আহ্নিক ও বার্ষিক গতি মন্থর হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলছেন চাঁদের আকর্ষণেই এই পৃথিবীতে যে জোয়ার সৃষ্টি হয় সেটা পৃথিবীর মতোই একই গতিতে ঘোরে, যা একইসঙ্গে পৃথিবীর গতি এবং এর পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু এই গতি যখনই চাঁদের কক্ষপথকে ছাড়িয়ে যায় তখনই চাঁদ একে টেনে ধরার চেষ্টা করে। এ কারণেই মন্থর হয়ে যায় পৃথিবীর গতি। আবার পৃথিবীর গতির ভারসাম্য রাখতে গিয়ে চাঁদের কক্ষপথ কখনো কখনো পৃথিবীর কক্ষপথের সামান্য সামনে চলে আসে চাঁদ তখন পৃথিবীর গতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। এটা করতে গিয়ে পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে কিঞ্চিৎ সরে যায়। এভাবেই একে অপরের প্রতি টান অব্যাহত রেখে চলেছে।


বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রায় ৬০০ মিলিয়ন বছর পর পৃথিবী থেকে চাঁদকে আর দেখাই যাবে না। চাঁদ তখন পৃথিবীর কাছে একটি দূরের তারা হয়ে থাকবে। খালি চোখে চাঁদের সৌন্দর্য আর দেখাই হয়তো যাবে না।


দ্য অটলান্টিক-এর রিপোর্ট বলছে, বিজ্ঞানীরা বিমিং লেজার্স-এর সাহায্যে লুনার রিট্রিট মেপেছেন। আর তাতেই ধরা পড়েছে, প্রতি বছর একটু একটু করে পৃথিবী থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, সাড়ে চার কোটি বছর আগে চাঁদের উত্পত্তি। সেই সময় পৃথিবীর অনেক কাছেই ছিল চাঁদ। এখন থেকে ১০ গুণ বেশি গতিতে সেই সময় চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করত। ফলে দিন হত মাত্র চার ঘণ্টার। পৃথিবীতে বাকি সময় রাত থাকত। যেটা সময়ের সাথে সাথে আজকের এই অবস্থায় এনেছে। আর এটাও প্রমাণ করে যে এভাবেই একদিন পৃথিবীর থেকে চাঁদের অবস্থান সরে যেতে যেতে একদিন নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যাবে। ছিটকে পড়বে একে অপরের থেকে মহাশূন্যের অনন্ত অন্ধকারে।


(ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ)

Post a Comment

COMMENTS

Previous Post Next Post